আপাতদৃষ্টিতে দুটি দিনের উদযাপনের মধ্যে কোনও পার্থক্য না থাকলেও, পতাকা উত্তোলনের পদ্ধতিতে কিছু তফাৎ আছে। এবং সেই পার্থক্য বজায় রাখা বাঞ্ছনীয়। কারণ দুই দিনই আলাদা ইতিহাস বহন করে।
স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবস – দুটি দিনই ভারতীয়দের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গর্বের দিন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে এই দুটি দিন পালন করেন দেশবাসী। আপাতদৃষ্টিতে দুটি দিনের উদযাপনের মধ্যে কোনও পার্থক্য না থাকলেও, পতাকা উত্তোলনের পদ্ধতিতে কিছু তফাৎ আছে। এবং সেই পার্থক্য বজায় রাখা বাঞ্ছনীয়। কারণ দুই দিনই আলাদা ইতিহাস বহন করে।
দীর্ঘ ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট স্বাধীনতা পেয়েছিল ভারত। এই দিনটি মূলত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ, তাঁদের অবদানকে মাথায় রেখেই পালিত হয়। অন্যদিকে, স্বাধীনতার তিন বছর পর ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি দেশে কার্যকর হয় সংবিধান। বিশ্ব দরবারে ভারত স্বীকৃতি পায় প্রজাতন্ত্র দেশ হিসাবে। সেই উপলক্ষ্যেই ২৬ জানুয়ারি পালিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস।
দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা তুলে দুটি দিন পালন করে দেশবাসী। তবে, দুইদিনের পতাকা উত্তোলনের মধ্যে রয়েছে তফাৎ। যা বহন করে গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্যও।
স্বাধীনতা দিবস (১৫ আগষ্ট) –
স্বাধীনতা দিবসের দিন পতাকা উত্তোলনকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘Hoist’। যার বাংলা তর্জমা করলে হয় ‘উত্তোলন’। এই দিনে পতাকা দণ্ডের নীচে বাঁধা থাকে। সেটিকে উপরে তোলা হয়। এই দিনেই ভারত দীর্ঘ ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি লাভ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। সেই দিন ব্রিটিশ ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে তেরেঙ্গা তোলা হয়। সেই থেকেই এই পদ্ধতি চলে আসছে।
স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লায় পতাকা উত্তোলন করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। সেদিন দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন তিনিই। এর আগের দিন অর্থাৎ ১৪ আগষ্ট জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি।
প্রজাতন্ত্র দিবস (২৬ জানুয়ারি) –
প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘Unfurl’। যার বাংলা তর্জমা ‘উন্মোচন’। এদিন পতাকা দণ্ডের উপরে আগে থেকেই বাঁধা থাকে। শুধু মাত্র পতাকাটি ভাঁজ করা থাকে। প্রজাতন্ত্র দিবসে পতাকার বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়। এদিনই বিশ্ব মঞ্চে ভারত প্রজাতন্ত্র দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তাই এদিন পতাকা উপরেই বাঁধা থাকে। শুধুমাত্র বাঁধন খুলে পতাকাটি উন্মোচন করা হয়।
প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজপথে জাতীয় পতাকা উন্মোচন করেন দেশের রাষ্ট্রপতি। তারপর বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সংস্কৃতি। এছাড়া নানান অস্ত্র ও প্যারেডের, মাধ্যমে ভারতীয় সেনা শক্তির প্রদর্শন হয়।